চাকু-কার্টারসহ ধরলো নিরাপত্তা বাহিনী, চুরির মামলা দিলো রেলওয়ে থানা - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

শুক্রবার, ডিসেম্বর ০১, ২০২৩

চাকু-কার্টারসহ ধরলো নিরাপত্তা বাহিনী, চুরির মামলা দিলো রেলওয়ে থানা

চাকু-কার্টারসহ ধরলো নিরাপত্তা বাহিনী, চুরির মামলা দিলো রেলওয়ে থানা
চাকু-কার্টারসহ ধরলো নিরাপত্তা বাহিনী, চুরির মামলা দিলো রেলওয়ে থানা


আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি: 

বগুড়ার সান্তাহার রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী তিনজন যুবককে আটক করেছে। আটকের সময় তাদের কাছ থেকে একটি বার্মিজ চাকু, একটি কার্টার, একটি রড, তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। সে সময় তাদের কাছ কয়েকটি মাস্টার চাবি (অটোচার্জারের) ও অন্যান্য চাবিও  উদ্ধার করা হয়। 


গত বুধবার ২৯ নভেম্বর ভোর রাতে জংশন স্টেশন সংলগ্ন ওয়াস ফিট বা সিক লাইন এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতদের রেলওয়ে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এরপর ওসি মোক্তার হোসেনের নির্দেশে গত দেড় মাস পূর্বের ব্যাগ ও মোবাইল চুরির চেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ওই দিনই আদালতে প্রেরণ করা হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন নিরাপত্তা বাহিনীর সংশিষ্টরা।


জানা যায়, প্রতিদিনের ন্যায় সান্তাহার রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা গত মঙ্গলবার রাতে টহল শুরু করে। নিয়মিত টহলের অংশ হিসেবে বুধবার ভোরে তিন জন যুবককে সন্দেহভাজন হিসেবে অবস্থান করতে দেখে তাদের আটক করে। আটককালে তাদের কাছ থেকে একটি বার্মিজ চাকু, একটি কার্টার, একটি রড, তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। সেসময় তাদের কাছ কয়েকটি মাস্টার চাবি (অটোচার্জারের) ও অন্যান্য চাবিও উদ্ধার করা হয়। যেগুলো দিয়ে তারা অটো রিকসা চুরি , ডাকাতি বা ছিনতাই অথবা বড়ো কোনো চুরি সংগঠিত করা সম্ভব বলে মনে করেন সচেতন মহল ও সংশি¬ষ্টরা। এরপর আটককৃতদের রেলওয়ে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। শুরু হয় মামলা নিয়ে নাটক। নিরাপত্তা বাহিনীদের অবগত করার কথা থাকলেও অবগত করেননি থানার ওসি মোক্তার হোসেন। এমনই অভিযোগ নিরাপত্তা সংশি¬ষ্ট কর্মকর্তার। আর ওসি মোক্তার হোসেন জানালেন, তাদেরকে অনেকবার অবগত করা হয়েছে, কিন্তু তারা কোনো মামলা দিতে রাজি হননি। 


এদিকে গত ১২ অক্টোবর এক ব্যাক্তির মোবাইল ও ব্যাগ চুরির চেষ্টা করা হলে একজনকে আটক করা হয়। ফলে ওই দিনই ভ‚ক্তভোগী ওই ব্যাক্তি অজ্ঞাতদের আসামি করে রেলওয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। আর সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা। অসৎ কাজে ব্যবহারের জন্য এতোগুলা উপকরণ পাওয়ার পরও দেড় মাস পূর্বের পুরাতন চুরির চেষ্টার মামলায় জড়িয়ে তাদেরকে আদলতে প্রেরণ নিয়ে খোদ নিরাপত্তা বাহিনীসহ অনেকের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তাদের প্রশ্ন চাকু, রড, কার্টার, মাস্টার চাবি পাওয়ার পরও কিভাবে গত দেড় মাস পূর্বের একটা চুরির চেষ্টার মামলায় চালান দিয়েছেন তা আমাদের বোধগম্য নয়।


ইতিপূর্বেও এই ওসির বিরুদ্ধে উঠেছিল নানা অনিয়মের অভিযোগ। তদন্দ কমিটিও গঠন হয়েছিল। কিন্তু কোনো এক অদৃশ্য কারণে বহাল তবিয়তেই আছেন ওসি মোক্তার হোসেন।  


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সান্তাহার রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর আনসার সদস্যরা ৩ জন যুবককে আটক করে। যাদের কাছে থেকে বার্মিজ চাকু, একটি রড়, একটি কার্টার ও বেশ কিছু মাস্টার চাবি পাওয়া গেছে। এই চাবি দিয়ে মোটরসাইকেল ও অটোচার্জার সহজেই চুরি করা সম্ভব। এবং তাদের সাথে ধারালো অস্ত্র থাকায় তার শুধু চুরি নয় ছিনতাই বা ডাকাতিও করতে পারতো। যেহেতু আমরা আমাদের ব্যারাকে মামলা দিতে পারি না তার কারণে আমরা তাদের রেলওয়ে থানায় হস্তান্তর করি। তবে আমাদের মধ্যে থেকে বাদী হয়ে থানায় মামলা করার কথা থাকলেও ওসি ঔ তিন যুবককে মামলা দেওয়া বা কোর্টে পাঠানোর সময় আমাদের কাউকে অবগত করে নাই। ওসি আগের মামালায় তাদের চালান দিছে যে মামলাতে সহজেই তাদের জামিন হয়ে যাবে।


এ বিষয়ে সান্তাহার রেলওয়ে থানার ওসি মোক্তার হোসেন বলেন, গত ২৯ নভেম্বর ভোর রাতে নিরাপত্তার আনসার সদস্যরা তিনজনকে আটক করে থানায় সোপর্দ করে। ওয়াসফিট এলাকা থেকে তাদেরকে আটক করে। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি ছোট্ট চাকু, এক ফিট মাপের রড একটি, একটি কার্টার এবং কিছু চাবি পেয়ে থানায় জমা দিয়ে গেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বাদী হয়ে মামলা করার জন্য বলা হয়েছিল এমনকি আমি তাদের ব্যারাকে পুলিশও পাঠিয়ে তাদের মামলা দেওয়ার জন্য খবর পাঠিয়েছিলাম কিন্তু তারা কেই আসে নাই এবং মামলাও দেয় নাই। তাই তাদেরকে পূর্বের গত ১২ অক্টোবরের এক ব্যাক্তির ব্যাগ ও মোবাইল চুরির চেষ্টার নিয়মিত মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। 


আপনি নাকি নিরাপত্তা বাহিনীকে না জানিয়ে দেড় মাস আগের চুরির অজ্ঞাত মামলায় ঐ তিন যুবকে কোর্টে পাঠিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেউ মামলা না দিলে কি করবো? আমি কি তাদেরকে তেলাইতে যাবো? আমার বক্তব্য একটাই তারা মামলা দেয়নি, আমার ওয়েতে আমি পেনডিং মামলায় দিয়েছি। চালান দিলেই যে মামলা দেওয়া যাবেনা এরতো কোনো ইয়ে নেই।


যেহেতু ঐ তিন যুবক জেল হাজতে আটক আছে, চাইলে এখনো মামলা দেওয়া যেতে পারে। যেহেতু তাদের বাদি নেই, তাই নতুন মামলা না দিয়ে পুরাতন মামলায় আটক দেখানো হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীরা চাইলে এখনো এসে মামলা দিক আমরা নিবো।


মাস্টার চাবি এর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন কয়েকটি চাবি পাওয়া গিয়েছে আর বার্মিজ চাকু কোনো অস্ত্র আইনের  মধ্যে পড়ে না আর ঐ চাকুটি ছোট ছিল।



Post Top Ad

Responsive Ads Here