ভোলায় বিলুপ্তির পথে খেজুরের রস - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

শনিবার, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৩

ভোলায় বিলুপ্তির পথে খেজুরের রস

ভোলায় বিলুপ্তির পথে খেজুরের রস
ভোলায় বিলুপ্তির পথে খেজুরের রস 


একে এম গিয়াসউদ্দিন, ভোলা :

শিহরে হিংস্র শীত থাবা পেতে কেশর ফুলিয়ে বসে থাকা সংবাদে আবির্ভুত হয় শিতের সকাল। লেপের তলা থেকে উঠি উঠি করে গরম বিছানায় ছেড়ে উঠতে গেলে আলস্য সমস্ত চেতনাকে ঘিরে ধরে।


ততক্ষণে বাইরের পৃথিবীর ঘুম ভেঙে পুর্ব দিগন্তে আলো ছড়িয়ে এক জোড়া নাম না জানা পাখি ডানায় বাতাস ফাটিয়ে কুয়াশার ভিতর দিয়ে আজানায় ছুটছে।


সবুজ ঘাসে শিশির ও উত্তর দিক থেকে হিমগর্ভ ঠান্ডা বাতাস শির শির করে গাছের পাতাগুলো সহসা কেপে উঠে।টুপ টুপ করে শিশির ঝরে পড়ে, টিনের চালে ঘাসে ঘাসে শিশিরের বিন্দু জমে ভোরের আলোয় ঝলমল করতে থাকে।


বাতাসে ভেসে আসছে খরকুটার ছাই  ধুয়ায় খেজুর রস জ্বাল দেয়ার লোভনীয় মিষ্টি গন্ধ। বাতাসে রসের গন্ধ আর মক্তবে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের সুর উচিয়ে কোরআন তেলোয়াত এখন বিলুপ্তির পথে।


ভোলায় খেজুর রসের চাহিদা থাকলেও আগের মতো খেজুর গাছ না থাকায় রসের ইচ্ছা অপুর্ণতায় উঠতি ছেলেমেয়ারা।


 এক সময় মানুষের বাড়িতে, সড়কের পাশে সারি সারি খেজুর গাছ দেখা যেত। গাছিরা সন্ধ্যায় গাছ কেটে হাঁড়ি বসিয়ে ভোর সকালে রসের মৌ- মৌ গন্ধে ভরে যেতো পল্লী অঞ্চল। এখন মাঝে মাঝে দু’একটি খেজুর গাছ থাকলেও তাও সবল নয়। দুর্বল প্রকৃতির গাছগুলোতে আগের মতো রস পড়ে না।


বর্তমানে গাছিরা পরিবেশ দূষণকে দায়ী করে বলেন, আগে পরিবেশ ছিল ভালো, প্রতিটি ফল মূলের গাছে ছিল ফুলে ফলে ভরা। বিভিন্ন পরিবেশ দূষণের কবলে পড়ে ফল মূলের গাছে আগের মতো ফল ধরে না। আগে সকালে হাঁড়ি নামিয়ে রস নিয়ে যাওয়ার পরও গাছে ফোঁটায় ফোঁটায় অবিরত ঝড়তে থাকত দুপুর পর্যন্ত।


খেজুর রস সংগ্রহকারী (গাছালি) নুরুল ইসলাম গাছী, কালাম গাছী,রশিদ বাতাইন্না, আব্দুল ওদুদ বেপারী বলেন, ২০১০-১১ সালে  দৈনিক রস সংগ্রহ হতো প্রায় ২৩-২৪ কেজি।  এখন খেজুর গাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। তারা আরও বলেন, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বিভিন্ন দূষণে গাছের শক্তি ও ভিটামিন কমে গেছে।আগে প্রচুর খেজুর গাছ ছিল অত্র এলাকায়, কিন্তু পরিবেশ দূষণ ও গাছের মালিকরা গাছগুলো ইটভাটায় লাকড়ি হিসেবে বিক্রি করে দেয়ায় খেজুর গাছ ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে।


 রসের পিঠার মজাই আলাদা, বছরে একবার প্রতিটি পরিবারে রস সংগ্রহ করে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ডুই পিঠা (ভাপা পিঠা), গুরা পিঠা, চিতল পিঠা, পাটিশাপটা পিঠা সহ বাহারী মোড়কে পিঠা তৈরীর উৎসব ছিলো সন্ধায় পরিবারের বাড়তি আমেজ।বর্তমান প্রজন্মের কাছে যা উত্তর  আর দক্ষিণ মেরুর গল্প কাহিনি।


Post Top Ad

Responsive Ads Here