ফরিদপুরে হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ খেলাধুলায় মেতেছিল গ্রামবাসী - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

শিরোনাম

রবিবার, ফেব্রুয়ারী ০৪, ২০২৪

ফরিদপুরে হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ খেলাধুলায় মেতেছিল গ্রামবাসী

ফরিদপুরে হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ খেলাধুলায় মেতেছিল গ্রামবাসী
ফরিদপুরে হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ খেলাধুলায় মেতেছিল গ্রামবাসী


আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: 

গাছে চড়তে পারেন অনেকেই। কিন্তু গাছটি যদি হয় সোজা আর তেল মাখানো? তেল মাখানো এমন কলাগাছে উঠতে প্রাণান্তকর চেষ্টা করতে দেখা গেল কয়েকজনকে। আরেক পাশে চলছে দুই দলের শক্তি প্রদর্শন। তাঁরা দুই ভাগে ভাগ হয়ে রশি টানাটানি করছেন। কেউবা হাতে লাঠি নিয়ে চোখ বেঁধে সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন হাড়ি ভাঙতে। বাচ্চারা আবার দৌঁড়াচ্ছে চটের বস্তা পরে। 


এমন সব ২০টি ইভেন্ট নিয়ে ব্যতিক্রমধর্মী গ্রামীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আসর বসেছিল ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়নের কদমী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। শনিবার দিনব্যাপী এ প্রতিযোগিতা দেখতে ভিড় করেছিল হাজারো কৌতূহলী মানুষ।


গ্রামীণ খেলাগুলো দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক হচ্ছে নতুন প্রজন্ম। ২০ বছর আগে গ্রামের ছেলেমেয়েরা ডাংগুলি, লাঠি খেলা, ঘুড়ি ওড়ানো, কলাগাছে ওঠা, রশি টানাটানিসহ বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলায় মত্ত থাকত সারাবেলা। সেই হারানো খেলাগুলো নতুন প্রজন্মের কাছে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিতে কদমী গ্রামবাসী আয়োজন করে গ্রামীণ খেলাধুলার উৎসব। এছাড়াও গ্রামীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ছাড়াও বিকালে অনুষ্ঠিত হয় নাটক, গান, কৌতুক, নাচ, যেমন খুশি তেমন সাজ ইত্যাদি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পরে পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয় সাংসারিক বিভিন্ন তৈজসপত্র। এদিকে গ্রামীণ এ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানকে ঘিরে গ্রাম্য মেলাও বসে।


ব্যতিক্রমধর্মী এ অনুষ্ঠানের নেতৃত্বে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী বোরহান উদ্দিন খান সৈকত। তাকে সহায়তা করেন, এলাকার তরুণ যুবক টুটুল, নাজমুল, রুবেল, আশিক, রাকিব, আবু সাঈদ, কাওছার, বাইজিদ, ফয়সাল, ইমন, গিয়াসসহ আরও অনেকে।


অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রূপাপাত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সোনা মিয়া, ইউপি সদস্য ছানোয়ার মোল্যা, বিশিষ্ট সমাজসেবক মনিরুজ্জামান মনির, আনোয়ার হোসেন, মানোয়ার মিয়া ও পলাশ হাসান প্রমুখ।


গ্রামীণ খেলা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক বোরহান উদ্দিন খান সৈকত জানান, 'এই প্রজন্মের হাতে হাতে মুঠোফোন। সারা দিন তারা এতেই ব্যস্ত থাকে। গ্রামে খেলাধুলা একেবারে হয় না বললেই চলে। আগের খেলাগুলোকে এই প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই এই আয়োজন। এলাকাবাসী আশাতীত সাড়া দিয়েছে। ভবিষ্যতে এমন উৎসব আরও বেশি করে আয়োজনে আগ্রহ পাচ্ছে কমিটি।'


অনুষ্ঠানের অতিথি রূপাপাত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান সোনা মিয়া বলেন, আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলো আজ বিলপ্তির পথে। গ্রামীণ খেলাগুলো অস্তিত্ব খুজেঁ পাওয়াই কঠিন। আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় গ্রাম বাংলার খেলাধুলা আজ রুপকথার ন্যায়। এ আয়োজন একটি ইতিবাচক দিক। প্রতিবছর এমন আয়োজন রাখার অনুরোধ জানান এই অতিথি।'