আমতলীতে গাজীপুর পুলিশ ফাঁড়ির দেড় যুগ ধরে ভবন নেই |
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি:
আমতলী উপজেলার গাজীপুর পুলিশ ফাঁড়ির ভবন নেই দেড় যুগ ধরে। স্থানীয় একটি সরকারী পরিত্যাক্ত খাদ্যগুদামে অফিস থাকা খাওয়াসহ বসবাস করছেন পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, আমতলী থানা থেকে ১০ কিলোমিটার পূর্বদিকে গাজীপুর বন্দর। এই বন্দরের মানুষের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এখানে একটি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা হয়। ২০০৬ সালের ১৯ অক্টোবর তৎকালীন এমপি মো. মতিয়ার রহমান তরিঘরি করে সরকারী একটি খাদ্যগুদামে অফিস বানিয়ে পুলিশ ফাড়ির কার্যক্রম উদ্ধোধন করেন।
ফাঁড়িতে ২ জন পুলিশ পরিদর্শক, ৩জন সহকারী পুলিশ পরিদর্শক ও ১৩ জন কনেস্টবলসহ মোট ১৮জন পুলিশ সদস্যের পদায়ন করে কার্যক্রম শুরু করা হয়।
ফাঁড়ির শুরুতে স্থানীয় একটি মাল রাখার খাদ্যগুদামে অফিস বানানো হয়। ভবনটির দুই পাশে ১০ ফুটের দুটি দরজা ছাড়া চারপাশে কোন জানালা নেই। এই ভবনেই অফিস, থাকা খাওয়াসহ সকল কার্যক্রম পরিচালনা করেন এই ফাড়ির ১৮ জন সদস্য।
রবিবার সকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ভবনের দুই পাশে বিশাল আকারের দুটি দরজা, দরজা আটকানোর জন্য লোহার একটি পাল্লা থাকলেও তা মরিচা ধরে নষ্ট হওয়ায় এখন আর নারানো যায় না। দরজা খোলা থাকে সবসময়। ভবনের চারপাশে কয়েকটি ভেন্টি লেটর ছাড়া কোন জানালা নেই। ভবনের উত্তর পশ্চিম কোনে অফিস বানানো হয়েছে। এখানে বসেই অফিস পরিচালনা করতে হয়। ভবনের ভিতরে বিশাল খোলা চত্ত¡রের দুই পাশে কাপর দিয়ে বেড়া টানানো সাড়ি সাড়ি কাঠের চৌকি। এই চৌকিতেই রাত কাটাতে হয় পুলিশ সদস্যদের। খাওয়া দাওয়া যার যার চৌকির উপরেই বসে সারতে হয় সবার। অফিসের জন্য জ্বালানো আলোর মধ্যেই সারা রাত ঘুমাতে হয় তাদের। এছাড়া ১০ ফুটের লোহার দরজাটি আটকানো জায়না ফলে শীত বর্ষা সব মৌসুমেই খোলা রেখে ঘুমাতে হয় তাদের। এতে শীত মৌসুমের ঠান্ডা বাতাসে অনেকে বুকের ব্যাথাসহ শীতকালীন নানান রোগে ভুগে থাকেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্য বলেন, গাজীপুর পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যদের জন্য খাদ্যগুদামের একটি পরিত্যাক্ত ভবন ছাড়া আর কিছুই নেই। ভবনের ভিতরে ধান চাল কিংবা আটার বস্তার মতোই অনেকটা মানবেতর জীবন জাপন করতে হয় আমাদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক সদস্য বলেন, বর্তমানে প্রচন্ড তাপদাহের কারনে ছাদ গরম থাকায় রাতের বেলায় ঘুমানো জায় না। তাছাড়া আলোবাতাস প্রবেশের জন্য কোন জানালা থাকায় গরমের সময় যে ভাবে গরম লাগে ঠিক শীতের সময় দরজা খোলা থাকায় ততটাই শীতে কষ্ট করে ঘুমাতে হয়। এটা অত্যান্ত মানবেতর জীবন জাপন করা ছাড়া আর কিছুই না। আমরা চাই এর সমাধান হোক।
গাজীপুর বন্দরের স্থায়ী বাসিন্দা মো. ছালাম মোল্লা বলেন, পরিত্যাক্ত নরবড়ে ভবনে পুলিশ ফাঁড়ি। ভববনটি যে কোন সময় ধ্বসে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এজন্য ফাঁড়ির জন্য দ্রæত ভবন নির্মান করা জরুরী হয়ে পড়েছে।
গাজীপুর ফাঁড়ির দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক দিবাকর বলেন, ভবন না থাকায় পুলিশ সদস্যদের একটি খাদ্যগুদামের ভবনে থাকা খাওয়া ঘুমানোসহ অফিস করতে হয়। এতে আমাদের খুব সমস্যা হচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানের জন্য এখানে দ্রæত একটি ভবন প্রয়োজন।
বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মোজাম্মেল হোসেন রেজা বলেন, ভবন নির্মানের জন্য পুলিশ কেন্দ্রীয় দপ্তরে চাহিদা দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ আসলে নির্মান কাজ শুরু করা হবে।#