লক্ষ্মীপুরে নির্বাহী প্রকৌশলীর রোষানলে এক কর্মচারী |
সোহেল হোসেন,লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুরে বসবাসরত পরিবারসহ এক কর্মচারীর ঘর ভেঙ্গে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে।
তিলে তিলে সঞ্চয় করা আসবাবপত্র ও মালামালসহ নিজের চোখের সামনে ঘর ভেঙ্গে দিতে দেখে ঘটনাস্থলেই অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সড়ক ও জনপদ বিভাগের ঐ কর্মচারী। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে প্রেরণ করেন। বর্তমানে তিনি লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন বলে জানিয়েছেন পরিবার।
বুধবার সকলে সড়ক ও জনপদ বিভাগের আবাসিক এলাকায়। পুলিশ, নিজ দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, ভাংচুর ও অপসারণের জন্য একদল শ্রমিক, বুলড্রোজারসহ বিশাল বহর নিয়ে এমন অভিযান চালানো হয় বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী পরিবার জানিয়েছেন, সরকারি বরাদ্দ পেয়ে দীর্ঘ ৩০ বছর থেকে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে টিনসেড আধাপাকা এই ঘরটিতে বসবাস করে আসছেন সড়ক ও জনপদ বিভাগের কার্যসহকারী মো. মাকসুদুর রহমান। দীর্ঘদিন থেকে সড়ক বিভাগের আবাসিক এলাকায় মাদক ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড চলে আসছে। যার নেতৃত্বে রয়েছে নির্বাহী প্রকৌশলীর ড্রাইভার নুরুল আমিনের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের কর্মকান্ড ও কুপ্রস্তাবে রাজি না থাকায় সজ্জন খ্যাত কার্যসহকারী মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান কে গত ৩০জানুয়ারি বান্দরবান জেলায় বদলি করা হয়। ৭জানুয়ারি অব্যাহতি পত্র পাওয়ার পর ১১জানুয়ারি তিনি কর্মস্থলে যোগদান করেন। যোগদানের ৪মাস তারপরও সার্ভিস বুক এবং এলপিসি প্রেরণ করা হয়নি সড়ক বিভাগ থেকে। বর্তমানে বেতন ভাতা বন্ধ রয়েছে তার। মানবতা জীবন যাপন করছে এই পরিবার।
এরই মাঝে সম্পূর্ণ ব্যবহারযোগ্য বসবাসের ঘরটিকে জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ দেখিয়ে বিগত ২৬মে তিন দিনের সময় দিয়ে মাকসুদুর রহমান কে ঘর ছাড়ার নোটিশ প্রদান করেন সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। তিন দিনের মধ্যে না ছাড়ায় ঘর ভেঙ্গে দেওয়ার এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তিনি।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের কার্য সহকারী খোরশেদ আলম জানান, অন্যত্র বদলি হওয়া অনেক কর্মকর্তা কর্মচারী, পরিবার নিয়ে আবাসিকে থাকেন। এর চেয়ে আরও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন আছে, কই সেগুলো ভাঙ্গা হচ্ছে না কেন? তাদেরকে তো আবাসিক ছাড়ার নোটিশ দেওয়া হয় না। এটা অন্যায় অমানবিক। তিনি রোষানলে পড়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বলেন, তিনি বান্দরবানে বদলি হয়েছেন, সেখানে চলে যাবেন এটাই স্বাভাবিক। এই স্থানে মাল্টিপল ভবন করা হবে। যেখানে অনেক কর্মচারী থাকতে পারবে। তাই ভবন ভেঙ্গে দেওয়া হচ্ছে। ওই স্থানে ভবনের কোন বরাদ্দ অথবা সরকারি কোনো নির্দেশনা আছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের তিনি কোন উত্তর দিতে পারেননি। এসময় তিনি আবাসিক এলাকায় মাদক ও অনৈতিকতার বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেও জানান।