পাসপোর্ট নবায়ন করতে না পেরে বৈধতা হারাচ্ছেন এক স্পেন প্রবাসী, আত্মহত্যার হুমকি |
ফরিদপুর প্রতিনিধি :
পাসপোর্ট নবায়নের জন্য নির্ধারিত ফি পরিশোধের পরেও রহস্যজনক কারণে স্পেনের বাংলাদেশ দুতাবাসে ফিঙ্গারিং করাতে না পেরে প্রবাসে বৈধভাবে অবস্থানের সুযোগ হারাতে চলেছেন ফরিদপুরের প্রকাশ চানা (৪৫) নামের এক ব্যবসায়ী।
তিনি বর্তমানে স্পেন প্রবাসী। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি ভার্চুয়ালী সংবাদ সম্মেলনে। এ সময় তিনি এ সমস্যার সমাধান না হলে আত্মহত্যা করবেন বলে জানিয়েছেন।
শনিবার সকালে স্পেন থেকে ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে ফরিদপুরের সাংবাদিকদের সাথে আয়োজিত এক প্রেস কনফারেন্সে এ অভিযোগ করেন প্রকাশ ছানা নামে ওই স্পেন প্রবাসী।
তিনি এ সময় আরো বলেন, আমি গত ২০২৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর স্পেন অ্যাম্বাসিতে আমার পাসপোর্ট রিনিউ করতে গেলে তারা আমার থেকে পাসপোর্টের ফ্রি বাবদ ১০০ ইউরো নেই এবং আমাকে রশিদ প্রদান করে। কিন্তু তারপর তারা আমার ফিঙ্গার নেয় না। আমার কাছে স্পেন মুদ্রায় ১৩ হাজার ৫০০ ইউরো দাবি করতেছে। তারা বলছে আমি যদি তাদের শর্ত পূরণ করি তাহলে তারা আমার পাসপোর্টের ফিঙ্গার নেবে। আমি যখন তাদের প্রশ্ন করি কেন আপনাদের আমি টাকা দেবো তখন তারা বলে কোন কথা নাই আপনাকে যে শর্ত দেয়া হয়েছে তা পূরণ করুন তারপর পাসপোর্ট বই।
এদিকে আমার স্পেনের রেসিডেন্ট কার্ডের মেয়াদও শেষ। পাসপোর্ট নেই, পাসপোর্ট ছাড়া কার্ড উঠানো যায় না। আমি যে কতটা মানবিকতার জীবন যাপন করিতেছি তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। তারা বলে আমি নাকি জাপানি। এই পরিস্থিতিতে আমি যদি আত্মহত্যা করি তার সম্পূর্ণ দায় বাংলাদেশ এম্বাসি স্পেনের উপর। এর সাথে জড়িত রয়েছেন সাব রহমান নামে এক স্পেন প্রবাসী।
তিনি বলেন, স্পেন প্রবাসী সাব রহমান আমার কাছে টাকা দাবি করেছেন আমি তার টাকা দিয়েছি। আমি তার কাছে এখন উল্টো টাকা পাই। তিনি আমাকে ফাঁসানোর জন্য বিভিন্ন চেষ্টা করছেন। আমি করোনা কালীন সময়ে সুদে তার কাছ থেকে ১৫০০০ ইউরো নিই। সময় মত সেই টাকা সম্পূর্ণ পরিশোধ করেছি ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে। যদিও এখন উনি আরো ১৫০০০ ইউরো দাবি করছেন।
এছাড়া আমার ভাই বিকাশ কুমার সাহা গত ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর ব্যবসায়িক প্রয়োজনে ঢাকায় থাকা অবস্থায় ঢাকা হতে নিখোঁজ হইয়া যায়। আজ পর্যন্ত তার খোঁজ মেলেনি। আমার ধারনা হয় প্রতারক চক্র আমার ভাইকে গুম করেছেন।
উল্লেখ্য এর আগে নিখোঁজ বিকাশ কুমার সাহার স্ত্রী ফরিদপুর প্রেসক্লাবে গত বছর একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে বিষয়টি জানিয়েছিলেন।
প্রকাশ ২০০৭ সালে বাংলাদেশ থেকে সাগরপথ পাড়ি দিয়ে তিনি ম্পেন পৌঁছান। তিনবছর ক্যাম্পে কাটিয়ে পাঁচবছর অবস্থানের পর তিনি ম্পেনের রেসিডেন্স কার্ড লাভ করেন। এখন সেই কার্ডের মেয়াদও শেষ। নিজের পাসপোর্টটি জমা রয়েছে স্পেন বাংলাদেশ এম্বাসিতে। এমন অবস্থায় চরম অমানবিক জীবন যাপন করছেন বলে তিনি সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন।
এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনায় গত ২৯ মে স্পেন মাদ্রিদের বাংলাদেশ এম্বাসি একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সেখানে উল্লেখ করা হয় প্রকাশ চানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দূতাবাস ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা প্রকার মিথ্যা ও অসত্য বিভ্রান্তিকর তথ্য পরিবেশন করছেন। এমতাবস্থায় দূতাবাস সকলকে সঠিক তথ্য জানানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে।
এতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে দূতাবাসে পাসপোর্ট প্রধান সহ সামগ্রিক কনসুলার কার্যক্রম অত্যন্ত স্বচ্ছ ও আন্তরিক ও সহযোগিতা পরায়ন। দূতাবাস এই মর্মে সকলকে সতর্ক করেছে যে, যে বা যারা দূতাবাসের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে মিথ্যা ও অসত্য তথ্য ছাড়াবে দূতাবাস তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের বাধ্য হবে। #