ফরিদপুর প্রতিনিধি :
ফরিদপুরের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধনে ওই সহকারী প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের স্থায়ী অপসারণের দাবি জানানো হয়।
সোমবার সকাল সাড়ে দশটায় ফরিদপুরের সদর উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের ভাটদী বঙ্গেশ্বরদী বাজারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বঙ্গেশ্বরদী গ্রামে অবস্থিত সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সদ্য নির্বাচিত ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. ফিরোজ আহমেদ। তিনি দেশের বাইরে থাকায় মানববন্ধনে তার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ওই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র বিশিষ্ট আইনজীবী মোশারফ হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, বিতর্কিত ওই সহকারী প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলামকে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ইতোমধ্যে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়েছে। লিখিত বক্তব্যে আরো উল্লেখ করা হয়, সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের ছাত্রদের দিয়ে তার পক্ষে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জোর করে অংশগ্রহণ করানোর বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ আসে। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভায় সর্বসম্মতভাবে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে ম্যানেজিং কমিটি তাকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি ইতিপূর্বে বিদ্যালয়ের অর্থ কেলেংকারির অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত হন।
লিখিত বক্তব্যে আরো উল্লেখ করা হয়, সিরাজুল ইসলাম একজন দুর্নীতিবাজ, মতলববাজ রাজনীতিবিদ। তিনি বিদ্যালয়ে চাকুরী করেন অথচ সারাক্ষন রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তিনি বিদ্যালয়ের কোমলমতি ছাত্রদেরকেও রাজনীতিতে ব্যবহার করেন।
২০২০ সালে বিদ্যালয়ে ছয় শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী থাকলেও তার জন্য এখন আছে মাত্র ৪৪০ জন। একমাত্র তার অপরাজনীতির জন্যই বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে এবং লেখাপড়ার মান ও শিক্ষার পরিবেশ চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। তিনি চাকরিরত অবস্থায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে সরাসরি একটি পক্ষে অংশ নিয়েছেন।
গত কয়েকদিন আগে সিরাজুল ইসলাম কর্তৃক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে দুই মাস। ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কর্তৃক অর্থ আত্মসাতের কথা বলেছেন। প্রধান শিক্ষক নাকি অর্থ আত্মসাতের অভিপ্রায়ে ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সরকার কর্তৃক ফেরত দেওয়া টাকা শিক্ষার্থীদের ফেরত দেন নাই। কিন্তু এ বিষয়টিও সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। প্রকৃত বিষয় হলো সরকার প্রায় ২২,০০০ টাকা সোনালী ব্যাংকের একটি নতুন এ্যাকাউন্টে ফেরত দেয়। কিন্তু ওই সময়ের সভাপতি ছিলেন সিরাজুল ইসলামের অনুগত এবং ওই সভাপতির অনিচ্ছার জন্য টাকা প্রধান শিক্ষক উত্তোলন করতে পারেননি। ইতোমধ্যেই ওই টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, সিরাজুল ইসলাম একজন দুর্নীতিবাজ, মতলববাজ রাজনীতিবিদ। তিনি বিদ্যালয়ে চাকরি করেন অথচ সারাক্ষণ রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তিনি বিদ্যালয়ের কোমলমতি ছাত্রদেরকে রাজনীতিতে ব্যবহার করেন।
এক্ষেত্রে বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রোগ্রামে ছাত্রদের জোর করে ব্যবহার করেন বলে ইতিমধ্যে বিদ্যালয়ের ছাত্ররা উল্লেখ করেছেন। তারা রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সম্পৃক্ততা থাকা এমন শিক্ষকের হাত থেকে বাঁচতে জোড় দাবি জানিয়েছেন।
মানববন্ধনে দাদপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শামীম মোল্যা বলেন, সহকারী প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম স্কুলের পরিবেশটা কে নষ্ট করছেন। আমরা স্কুলের রাজনীতির এই নোংরা খেলা বন্ধ করার জন্য তার বহিষ্কার চাই।
মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি হারুনুর রশিদ, স্কুল এর ম্যানেজিং কমিটির সদস্য হোসনেয়ারা, ডাক্তার হাফিজুর রহমান, কমল সোম, বিপ্লব সরকার, ইউনিয়ন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ লোকমান হোসেন সহ অভিভাবক সদস্যরা অংশ নেয়।
মানববন্ধন শেষে সহকারী প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের অপসারণ চেয়ে এক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
এ বিষয়ে জানতে সহকারী প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। আমি এমন কোন কর্মকান্ডের সাথে কখনো জড়িত নয়।#