পবিত্র আশুরার রোজা রাখার ফজিলত - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

শনিবার, জুলাই ১৩, ২০২৪

পবিত্র আশুরার রোজা রাখার ফজিলত

 

পবিত্র আশুরার রোজা রাখার ফজিলত
পবিত্র আশুরার রোজা রাখার ফজিলত

হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী:

ইসলামের প্রাথমিক যুগে আশুরার রোজা ফরজ ছিলো। দ্বিতীয় হিজরি সনে রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার বিধান নাজিল হলে আশুরার রোজা ঐচ্ছিক হিসেবে বিবেচিত হয়। আশুরা দিবসে রোজা পালনের জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন।


আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রমজানের পর সর্বাধিক উত্তম রোজা হলো মহররম মাসের রোজা। আর ফরজের পরে সর্বাধিক উত্তম নামাজ হলো তাহাজ্জুদের নামাজ।  (মুসলিম: ১/৩৫৮)


রাসুলুল্লাহ (সা.) এই রোজা নিজে পালন করেছেন। উম্মতকে রাখার প্রতি উৎসাহিত করেছেন। তাই এর পূর্ণ অনুসরণ ও আনুগত্যের মধ্যেই নিহিত রয়েছে উম্মতের কল্যাণ। আবু কাতাদা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুল (সা.)-কে আশুরার রোজার ফজিলত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘এই রোজা বিগত বছরের গুনাহ মুছে দেয়।’ (মুসলিম, হাদিস: ১১৬২)


আরও বর্ণিত আছে,  আশুরা দিনের রোজা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেছিলেন, এর ফলে আগের বছরের গোনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।’ (মুসলিম: ১/৩৫৮) আয়েশা (রা.) বলেন, ‘জাহিলি যুগে কুরাইশরা আশুরার দিনে রোজা পালন করতো। রাসুলুল্লাহ (সা.)-ও সে কালে রোজা পালন করতেন। মদিনায় এসেও তিনি রোজা পালন করতেন এবং অন্যদেরও নির্দেশ দিলেন। রমজানের রোজার আদেশ নাজিল হলে আশুরা দিবস বর্জন করা হয়। এখন কেউ চাইলে তা পালন করুক, আর চাইলে তা বর্জন করুক।’ (বুখারি: ১/২৬৮)


আরো পড়ুন: মু’মিন ও মুনাফিক চেনার সহজ উপায়


আয়েশা (রা.) আরও বলেন, ‘রাসুল (সা.) বলেন, রমজান মাসের রোজার পর সর্বোত্তম রোজা আল্লাহর মাস মহররমের আশুরার রোজা।’ (সুনানে কুবরা: ৪২১০) আশুরার রোজা রাখতো অন্যরাও মুসলিম শরিফে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত- ‘মহানবী (সা.) যখন আশুরার দিনে রোজা রাখেন এবং অন্যদেরও রোজা রাখার নির্দেশ দেন, তখন সাহাবিরা অবাক হয়ে বলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! ইহুদি-নাসারারা তো এই দিনটিকে বড়দিন মনে করে। (আমরা যদি এই দিনে রোজা রাখি, তাহলে তো তাদের সঙ্গে সামঞ্জস্য হবে। তাদের প্রশ্নের উত্তরে রাসুল (সা.) বললেন, ‘তারা যেহেতু এদিন একটি রোজা পালন করে) আগামী বছর ইনশাআল্লাহ আমরা এই ১০ তারিখের সঙ্গে ৯ তারিখ মিলিয়ে দুই দিন রোজা পালন করবো। (মুসলিম: ১১৩৪) আশুরার দিনে অন্য একটি আমল আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন,  যে ব্যক্তি আশুরার দিনে আপন পরিবার-পরিজনের মধ্যে পর্যাপ্ত খানাপিনার ব্যবস্থা করবে, আল্লাহপাক পুরো বছর তার রিজিকে বরকত দান করবেন। (তাবরানি: ৯৩০৩)



আরো পড়ুন: আশুরার গুরুত্ব ও তাৎপর্য


উল্লিখিত হাদিস সম্পর্কে আল্লামা ইবনুল জাওযিসহ অনেক মুহাদ্দিস আপত্তিজনক মন্তব্য করলেও বিভিন্ন সাহাবি থেকে ওই হাদিসটি বর্ণিত হওয়ায়। আল্লামা জালালুদ্দিন সুয়ুতিসহ অনেক মুহাক্কিক আলেম হাদিসটিকে গ্রহণযোগ্য ও আমলযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন। (জামিউস সগির-১০১৯) এ মাসে রোজা রাখার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত এক হাদিসে নবী করিম (সা.) বলেন, ‘রমজানের পর আল্লাহর মাস মুহাররমের রোজা হলো সর্বশ্রেষ্ঠ।  (মুসলিম: ২/৩৬৮; জামে তিরমিজি: ১/১৫৭) আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে রমজান ও আশুরায় যেরূপ গুরুত্বের সঙ্গে রোজা রাখতে দেখেছি, অন্য সময় তা দেখিনি। (বুখারি: ১/২১৮)


আলী (রা.)-কে এক ব্যক্তি প্রশ্ন করেছিল, রমজানের পর আর কোন মাস আছে, যাতে আপনি আমাকে রোজা রাখার আদেশ করেন? তিনি বললেন, এই প্রশ্ন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট জনৈক সাহাবি করেছিলেন, তখন আমি তার কাছে উপস্থিত ছিলাম। উত্তরে রাসুল (সা.) বললেন, ‘রমজানের পর যদি তুমি রোজা রাখতে চাও, তবে মহররম মাসে রাখো। কারণ, এটি আল্লাহর মাস। এ মাসে এমন একটি দিন আছে, যে দিনে আল্লাহ তাআলা একটি জাতির তওবা কবুল করেছেন এবং ভবিষ্যতেও অন্যান্য জাতির তওবা কবুল করবেন। (জামে তিরমিজি: ১/১৫৭)


আশুরার রোজা সম্পর্কে এক হাদিসে এসেছে, ‘তোমরা আশুরার রোজা রাখো এবং ইহুদিদের সাদৃশ্য ত্যাগ করো; আশুরার আগে বা পরে আরও একদিন রোজা রাখো।’ (মুসনাদে আহমদ: ১/২৪১) মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে উপরোক্ত বিষয়ের উপর আমল করার তাওফিক দান করুন আল্লাহুম্মা আমিন।



Post Top Ad

Responsive Ads Here