কোটা সহিংসতায় রাবির ক্ষতি প্রায় ৪ কোটি
নিজস্ব প্রতিবেদক:
কোটা সংস্কার আন্দোলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ১০টি আবাসিক হলের ১৫৮টি কক্ষে নারকীয় তাণ্ডব চালানো হয়। এই সহিংসতায় প্রায় চার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গঠিত কমিটির প্রাথমিক তদন্তে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।
রোববার (২৮ জুলাই) ক্ষতিগ্রস্ত হলগুলো পরিদর্শন শেষে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বিষয়টি তুলে ধরেন।
পরিদর্শনকালে তারা কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দী হল, মাদার বখশ হল, শহিদ জিয়াউর রহমান হলসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য স্থাপনাগুলো পরিদর্শন করেন।
অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, সহিংসতার ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক এসএম একরাম উল্লাহকে আহ্বায়ক করে কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোজাম্মেল হোসেন বকুলকে। তদন্ত কমিটিকে ঘটনার বিবরণ, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এবং কী করণীয় (সুপারিশ) সম্পর্কে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এজন্য কমিটিকে আট সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে।
রাবি উপাচার্য বলেন, এরই মধ্যে আবাসিক হলগুলোর প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ দিয়েছেন হল প্রাধ্যক্ষরা। তাতে দেখা গেছে ১০টি হলের ১৫৮টি কক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ক্ষতির পরিমাণ প্রায় চার কোটি টাকা। এখন আমাদের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি আগে নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও হলগুলোকেও বসবাসের উপযোগী করতে হবে। বেশ কিছু হল এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে কেউ দেখলে তার মনে আঘাত লাগবে। তাই আমরা চাই না যে শিক্ষার্থীরা এসে এসব দেখুক। আমরা এসব সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি।
উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যে সহিংসতা ঘটে গেছে তা খুবই দুঃখজনক। প্রথমে যে আন্দোলন হয়েছিল কোটা সংস্কারের দাবিতে সেটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ছিল। কিন্তু গত ১৬ তারিখে একটা দুর্বৃত্তায়ন হয়ে গেল এখানে। বহিরাগতরা ঢুকে জ্বালাও-পোড়াও করে এই ক্যাম্পাসে। ১৭ জুলাই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তিন দফা বৈঠক করেছিলাম। কিন্তু আলোচনা শেষে শিক্ষার্থীরা বাইরে গিয়ে জানালো তাদের থেকে মাইক ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। বহিরাগতরা ঢুকেছে এখানে, তাদের হাতে আন্দোলন নেই। তখনই বুঝতে পারলাম যে খারাপ দিকে যাচ্ছে বিষয়টা।
এ সময় রাবি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক হুমায়ুন কবীর, বিজ্ঞান অনুষদের অধিকর্তা ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক নাসিমা আখতার, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক তারিকুল হাসান, প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক, ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ, জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রণব কুমার পান্ডে, লিগ্যাল সেলের প্রশাসক সাদিকুল ইসলাম, পরিবহণ প্রশাসক মোকছিদুল হক,ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হাবিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ওমর ফারুক সরকার, সংশ্লিষ্ট হল প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষক এবং সহকারী প্রক্টররা উপস্থিত ছিলেন।