ঠাকুরগাঁওয়ে পাউবো কর্মকর্তার কোটি টাকার কাঠ বাণিজ্য - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

রবিবার, অক্টোবর ০৬, ২০২৪

ঠাকুরগাঁওয়ে পাউবো কর্মকর্তার কোটি টাকার কাঠ বাণিজ্য

ঠাকুরগাঁওয়ে পাউবো কর্মকর্তার কোটি টাকার কাঠ বাণিজ্য
ঠাকুরগাঁওয়ে পাউবো কর্মকর্তার কোটি টাকার কাঠ বাণিজ্য -ছবি সময় সংবাদ


জসীমউদ্দীন ইতি, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:

ঠাকুরগাঁওয়ের পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা এস এম রিয়াজুল হক। ২০১৯ সাল থেকে এ পদে কর্মরত রয়েছেন তিনি। সরকারি কর্মকর্তা হয়েও গোপনে গাছ কেনা, কনস্ট্রাকশন ভবনে কাঠ সরবরাহ, বিক্রি ও মজুদ করেছেন তিনি। 


পৌরশহরের কয়েকটি  সমিলে সরেজমিনে দেখা যায়, ফাড়াবাড়ি অটোস্ট্যান্ড মোড়ে সাইফুলের মিলে কাঁঠাল গাছের গুড়ি, সেনুয়া ব্রিজের পাশে বাবুর মিলে কাঁঠাল ও মেহগনী গাছের গুড়ি সহ মৌসুমির মিল, ফারুকের মিল সহ প্রায় সব কটি মিলে তার রয়েছে কোটি টাকার কাঠের গুড়ি। সমিলগুলো থেকে কাঠের বিভিন্ন আকৃতি করে সেগুলো মজুদ করে রাখেন দুটি গোডাউনে। 


সরকারি কর্মকর্তার এমন কাঠ বাণিজ্যে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী ও সমিলের মালিকরা। চড়া দামে কাঠ কিনে মজুদ করায় বাজার ধরে রাখতে পারছেন না তারা। কর্মকর্তার এমন গোপন ব্যবসার আর কোটি টাকার আয় নিয়েও নানান প্রশ্ন তুলেছেন তারা।


পৌরশহরের নিশ্চিন্তপুর ও তেলী পাড়ায় কাঠ মজুদ করার জন্য দু’টি গোডাউন রয়েছে তার। বিভিন্ন সমিল থেকে প্রস্তুত করা কাঠ মজুদ করে রাখা হয় গোডাউনে। দিনের বেলা সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে ব্যবসার গোমর ফাঁস থেকে বাঁচতে গভীর রাতে গোডাউন থেকে ট্রাকে করে কাঠ অন্যত্র পাঠান তিনি। তাতেও নিস্তার হয়নি এ সরকারি কর্মকর্তার। রাতের বেলা কাঠ সরিয়ে নেওয়ার সময় গণমাধ্যমের মুখে পড়েন তিনি। 


সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯ এর বিধিমালার ১৭ নম্বর ধারায় বলা আছে, কোনো সরকারি কর্মচারী সরকারের অনুমোদন ছাড়া, সরকারি কাজ ছাড়া অন্য কোনো ব্যবসায় জড়িত হতে পারবেন না। অন্য কোনো চাকরি বা কাজ গ্রহণ করতে পারবেন না। স্থানীয় সমিলের মালিক মোহাম্মদ বাবু বলেন, শহরের প্রত্যেকটা মিলে তার কয়েক কোটি টাকার কাঠ কেনা রয়েছে। আমরা যদি ৫০ টাকা দাম বলে , থাকি সে ৭০ টাকা দিয়ে সে সব কাঠ কিনে গোডাউনে রেখে দেয়। তার জন্য আমরা ব্যবসা করতে পারি না। তিনি এত টাকা কোথা থেকে পান। আর চাকরীর পাশাপাশি ব্যবসা কিভাবে করেন।


কাঠ ব্যবসায়ী আরিফ হাসান বলেন, আমাদের কয়েক মাস থেকে ব্যবসাকে ধরে রাখা কঠিন হয়ে গেছে। তিনি সবকিছু বেশি দামে কিনে নেন। সেগুলো আবার গোডাউনে মজুদ করে রাখেন। ঠাকুরগাঁও জেলা সহ বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করেন। তার টাকার কাছে আমাদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।


চাকুরীর পাশাপাশি একই কর্মস্থলে ব্যবসার বিষয়ে জানতে চাইলে এস এম রিয়াজুল হক বলেন, আমি কয়েক দফায় ৪০ হতে ৪৫ লাখ টাকার কাঠ কিনেছি। রংপুরে দু’টি ভবনের কনস্ট্রাকশনের জন্য কিনে দু’টি গোডাউনে রেখেছি। তবে এটি আমার ব্যবসা না। আর সব সমিলে আমার কাঠ কেনা রয়েছে। সবার হক আদায়ে আমি এটি করেছি। গভীর রাতে গোডাউন থেকে কাঠি সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, দিনের বেলা আপনারা এসেছেন। ভাবলাম ঝামেলা হবে সে জন্য রংপুর পাঠিয়ে দিচ্ছি। ঠাকুরগাঁও জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কৃষ্ণ কমল চন্দ্র সরকার বলেন, বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবসা করার সুযোগ নেই। এটি প্রমাণিত হলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।


Post Top Ad

Responsive Ads Here