জাতীয় এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষে রাঙ্গামাটিতে সংবাদ সম্মেলন |
মহুয়া জান্নাত মনি, রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি:
রাঙ্গামাটি জেলায় এবার ২৯ হাজার ৪৬৭ জন কিশোরীদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধী জাতীয় এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইনের আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা: নূয়েন খীসা।
তিনি জানান, ইতিমধ্যে প্রায় লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৫০শতাংশ কিশোরী এইচপিভি টিকার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছে এবং যাদের রেজি: করতে সমস্যা হবে তারা সরাসরি নির্ধারিত টিকাদান কেন্দ্রে এসে টিকা গ্রহনের সুযোগ পাবেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে এই টিকাদান কর্মসূচীর উদ্বোধন করা হবে বলে জানান তিনি।
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের উদ্যোগে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৪ উপলক্ষ্যে রাঙ্গামাটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে রাঙ্গামাটি জেলা সিভিল সার্জন ডা: নূয়েন খীসা এসব কথা বলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ডবিøউ এইচ ও প্রতিনিধি ডা: তানভির হোসেন, ডা: জয়ধন তঞ্চঙ্গ্যা, প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি প্রবীণ সাংবাদিক এ কে এম মকছুদ আহমেদ, রাঙ্গামাটি প্রেস ক্লাব সভাপতি মো: সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, রাঙ্গামাটি রিপোর্টাস ইউনিটি সভাপতি সুশীল প্রসাদ চাকমা প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে রাঙ্গামাটি জেলা সিভিল সার্জন ডা: নূয়েন খীসা আরো জানান, আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এই টিকাদান কর্মসূচী সরকারী ছুটির দিন ব্যতিত আগামী ১৮ কর্মদিবস পর্যন্ত চলমান থাকবে। এর মধ্যে প্রথম ১০দিন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং পরের ৮দিন ইপিআইয়ের স্থায়ী ও অস্থায়ী কেন্দ্রগুলোতে এই টিকাদান কর্মসূচী চলবে।
সিভিল সার্জন আরো জানান, জরায়ুমুখ ক্যান্সার ভাইরাস জনিত একটি প্রাণঘাতী প্রতিরোধযোগ্য সংক্রামক রোগ। ২০২০ সালের তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী প্রতিবছর বিশে^ ৬ লক্ষাধিক নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। যার মধ্যে প্রায় ৩লক্ষ মৃত্যুবরণ করে থাকে। এর প্রায় ৯০% মৃত্যুই বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল বা স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে ঘটে থাকে। দক্ষিণ-পূব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে এই ক্যান্সারে সবচেয়ে বেশী নারী প্রাণ হারান। বাংলাদেশ প্রতি এক লক্ষ নারীদের মধ্যে ১১জন জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং প্রতি বছর প্রায় ৫ হাজারের কাছাকাছি নারী মৃত্যুবরণ করেন।
তিনি আরো বলেন, কিশোরী বয়সে এইপিভি টিাকা নিলে নারীদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব। এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা তার সমমানের ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণী শ্রেনীল ছাত্র এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত নয় এমন ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের এক ডোজ এইচপিভি টিকা দেয়া হবে। টিকা পেতে আগ্রহী সবাইকে অনলাইনে রেজিষ্ট্রেশনের মাধ্যমে এই টিকা গ্রহন করা যাবে। এইচপিভি টিকা নেয়ার জন্য নিদিস্ট তারিখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অথবা স্থায়ী/অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে আসতে হবে। এইচপিভি টিকা দেয়া শেষ হলে টিকা কার্ডটি যতœ সহকালে সংরক্ষণ করতে হবে। ভবিষ্যতে বিদেশযাত্রাসহ বিভিন্ন নাগরিক সেবা এবং টিকা পাওয়ার প্রমাণস্বরূপ টিকা কার্ডটি প্রয়োজন হতে পারে বলে জানান তিনি।
প্রেস কনফারেন্সের শুরুতে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন বিষয়ে জনসচেতনতামুলক একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করা হয়।