আলফাডাঙ্গায় হেলিপোর্টের পতিত জমিতে নির্মিত হচ্ছে বিনোদন কেন্দ্র |
আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুর শহর থেকে প্রায় ৫২ কিলোমিটার দূরে আলফাডাঙ্গা উপজেলা। মধুমতি ও বারাশিয়া নদী বেষ্টিত উপজেলাটিতে গড়ে ওঠেনি তেমন কোন বিনোদন কেন্দ্র কিংবা পার্ক।
তবে কয়েকবছর আগে উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরে মুজিব শতবর্ষ নামে একটি পার্ক নির্মাণের পর জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই নানা প্রতিবন্ধকতায় পার্কটি বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। এরপর এ উপজেলায় কোন বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় নতুন পরিকল্পনা করে উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা পরিষদ চত্বরের পাশেই ঐতিহাসিক হেলিপোর্ট নামে পরিচিত প্রায় এক একর জমি দীর্ঘদিন পতিত অবস্থায় পড়েছিল। যা কিছুদিন আগেও ছিল ঝোপঝাড়ে আচ্ছাদিত। সম্প্রতি এই জায়গা জুড়ে বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয় উপজেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইতোমধ্যে হেলিপোর্টের সুবিশাল জায়গার ঝোপঝাড় পরিস্কার করে বিভিন্ন স্থানে মাটি ও বালু দিয়ে সমতাল করা হয়েছে। চারিদিকে ইটের সলিং দ্বারা নির্মাণ করা হচ্ছে ওয়াকওয়ে। এরপর ভিতরের জায়গায় শিশুদের জন্য স্টিলের দোলনা, স্লিপার, আপ স্ট্যান্ড, ঢেকিসহ বিভিন্ন প্রকার রাইডার দিয়ে সাজিয়ে তোলা হবে। সেইসঙ্গে বিভিন্ন রঙের আলোকবাতিসহ বসানো হবে বেঞ্চ। রোপণ করা হবে বিভিন্ন প্রকার সৌন্দর্যবর্ধন বৃক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে টিআর প্রকল্পের বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে ৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ পায় উপজেলা প্রশাসন। এরমধ্যে ৭ লাখ টাকা দিয়ে প্রাথমিকভাবে বিনোদন কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। এছাড়া প্রকল্পের ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি ও অফির্সাস ক্লাবের বিভিন্ন আসবাবপত্র সামগ্রী ক্রয় করা হয়। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের শুরুতে বিনোদন কেন্দ্রের কিছু কাজ শুরু করার উদ্যোগ নেয় উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু বিভিন্ন নির্বাচন, সরকার পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কাজ সমাপ্ত করতে বিলম্ব হয়। এরইমধ্যে গত সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি বিনোদন কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। বর্তমানে প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ সমাপ্ত হয়েছে।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা প্রেসক্লাবে সভাপতি আলমগীর কবীর জানান, বিনোদন আমাদের জীবনের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। কিন্তু আমাদের উপজেলায় নেই কোন বিনোদন কেন্দ্র। এই বিনোদন কেন্দ্র নির্মিত হলে আমাদের শিশুরা পাবে প্রশান্তির ছায়া। হেলিপোর্টের জায়গাটি দীর্ঘদিন ধরে পতিত অবস্থায় পড়েছিল। সেই জায়গায় প্রশাসনের বিনোদন কেন্দ্র রূপান্তরের উদ্যোগটি প্রশংসনীয়।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রণব পান্ডে বলেন, প্রাক্কলন অনুসারে সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে শতভাগ কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। পিআইসির সভাপতি ও সদস্যদের নজরদারির মাধ্যমে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ সমাপ্ত হবে।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারমীন ইয়াসমীন জানান, বিনোদন কেন্দ্রের নির্মাণ কাজটি আগে শেষ করার কথা থাকলেও নানা জটিলতার জন্য সমাপ্ত করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রাক্কলন অনুসারে কাজ চলমান রয়েছে। শতভাগ কাজ শেষ করার জন্য সার্বক্ষণিক তদারকি চলছে। কাজ শেষ হলে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাধ্যমে উদ্বোধন করার পরিকল্পনা রয়েছে।